Banner-adv-3-november.jpg The Incident
× Warning! Check your Cooke | Total Visitor : 142662

রাজশাহী

Published :
06-09-2020 । 02:48:34pm

Total Reader: 243



‘চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের পরিবর্তে দুর্নীতি ও অনিয়ম বাড়ছে রামেক হাসপাতালে’


স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বিনাচিকিৎসায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলার প্রতিবাদে এবার মাঠে নামলো সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ।

রবিবার সকালে রামেক হাসপাতাল সংলগ্ন নগরীর লক্ষীপুর মোড়ের ক্লিনিকপাড়ায় বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত, মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলাকারী ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। আগামী সাতদিনের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে রাজশাহীবাসী রামেক হাসপাতাল ঘেরাও করে দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেওয়া হয়। মানববন্ধনে দাবি করা হয়, প্রশাসন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে যারছে না। তবে ক্রমশই দুর্নীতি ও অনিয়মে নিমজ্জিত হচ্ছে হাসপাতালটি। এ কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন পেশাজীবিরা অংশ গ্রহণ করে হাসপাতালে ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের দৌরাত্ম বন্ধের জোর দাবি জানান।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলীর সভাপতিতে কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান, সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, মোহনপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ, সমাজ উন্নয়ন কর্মী সুব্রত পাল, মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি হাকিম আতাউর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, মহিলা পরিষদ রাজশাহীর নেত্রী আকলিমা খাতুন লিমা, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন রাজশাহীর সহসভাপতি সেলিনা বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান খন্দকার, সমাজকর্মী মো. আরিফুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যাস সুফিয়া হাসান, প্রকৌশলী খাজা তারেক, জেলা লোকমোর্চার সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আবদুল মতিন, মুক্তিযোদ্ধা বজলার রহমান, উন্নয়নকর্মী গোলাম নবী রনি, জেলা ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার পাশা ও যুবনেতা কেএম জোবাইদুর রহমান প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তার বলেন, রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ইন্টার্ন নামের কিছু গুন্ডা চিকিৎসক। এ হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা। চিকিৎসা অবহেলায় মৃত্যু এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি ও রামেক হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত না হলে প্রয়োজনে ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনে নামবে রাজশাহীবাসী।

বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে যে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এটি নিরপেক্ষ না। তদন্ত কমিটির সদস্যরা সকলেই চিকিৎসক। তাই অচিরেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে রাজশাহীবাসী। যেসব ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে বলেও হুশিয়ারি দেন বক্তারা।

বক্তারা দাবি করেন, ভালো চিকিৎসক হবার আগে ভালো মানুষ হতে হবে। কিন্তু চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা দেন না। শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই নন, দেশের সাধারণ মানুষও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, রামেক হাসপাতালে বর্তমানে দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে। আর এ দুর্নীতি আড়াল করতেই হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেন না পরিচালক। অবিলম্বে রামেক হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চান তারা।

বক্তারা বলেন, করোনাকালে যে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। চিকিৎসকরা যেভাবে টাকা লুটপাত করেছে, এসব চিকিৎসার নামে টাকা খরচের হিসাবও দাবি করেন তারা। তারা বলেন, সরকার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য নানা পদক্ষেপ নিলেও রামেক হাসপাতালের চিকিৎসক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্ধ লুটপাট করা হয়েছে। হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দৌরাত্ম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসার নামে তারা রোগী ও স্বজনদের মারপিট করে পুলিশে সোপর্দ করার মত ঘটনাও ঘটাচ্ছে। প্রায় রামেক হাসপাতলে এমন কান্ড ঘটলেও কর্তপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রামেক হাসপাতালে এ অবস্থার পুণরাবৃক্তি ঘটলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণাও দেওয়া হয় মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে পারুল বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে ওই নারীর ছেলেকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সেদিন বিকেলে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি মায়ের দাফনের কাজে অংশ নেন। কোমরের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে হার্ট অ্যাটাকে মায়ের মৃত্যু হয়। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনেক ডাকাডাকি করলেও কেউ চিকিৎসা করেনি। উল্টো এর প্রতিবাদ করলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নিহতের ছেলে রাকিবুলকে মারধর করেছেন। বাধা দিতে গেলে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ইসহাক আলীকেও মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকেই ইন্টার্নদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এসংক্রান্ত আরো সংবাদ : রামেক-হাসপাতাল




একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার চার পাশে ঘটে যাওয়া সংবাদ উপযোগী যে কোন ঘটনার ছবি বা ভুক্তভোগী ও সম্পৃক্তদের মোবাইল নম্বর আমাদের পাঠাতে পারেন।

সম্পাদক : রাজু আহমেদ

বার্তাকক্ষ
এসোসিয়েশন ভবন
৬১০০, রাজশাহী, বাংলাদেশ।
rzuahd@gmail.com
call@ 01711027084